top of page
Search

যারা বরকত খুঁজছেন অথবা বরককত শূন্যতায় ভুগছেন, এই পোষ্টটি তাদের জন্য। _______________________________

  • Writer: Mohammad Aminul Islam
    Mohammad Aminul Islam
  • Dec 3, 2019
  • 3 min read

অর্থ-সম্পদে, জীবন-যৌবনে, সন্তানাদিতে, কাজকর্মে এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বরকত পাওয়ার জন্য কুরআন ও সুন্নাতে বর্ণিত বিভিন্ন আমল রয়েছে। আপনাদের কাছে এগুলোর বাইরে জানা থাকলে কমেন্টে উল্লেখ করবেন প্লীজ!


১। আল্লাহ্‌ তাআলার প্রশংসা ও শুকরিয়া আদায় করাঃ- প্রতিটি নেয়ামত পাওয়ার সাথে সাথে বা খাওয়ার সাথে সাথে 'আলহামদুলিল্লাহ' বলে আল্লাহ তা'য়ালার শুকরিয়া আদায় করা। আল্লাহ তায়ালা তাতে খুশি হবেন এবং নেয়ামত আরো বহুগুণে বৃদ্ধি করে দিবেন। [সূরাহ ইব্রাহীমঃ আয়াত নং ৭ অনুসারে]


২। বিসমিল্লাহ্‌ বলাঃ- সব কাজের শুরুতে (বিসমিল্লাহ) আল্লাহ তা'য়ালার নাম দিয়ে শুরু করা। বিশেষ করে বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু করা। আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ছয়জন সাহাবীসহ আহার করছিলেন। এমন সময় এক বেদুঈন এসে সমস্ত খাদ্য দু’গ্রাসে শেষ করে ফেললো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সে যদি ‘বিসমিল্লাহ’ বলে আহার করতো, তাহলে এ’ খাদ্য তোমাদের সকলের জন্য যথেষ্ট হতো। অতএব তোমাদের কেউ আহার গ্রহণকালে যেন ‘বিসমিল্লাহ’ বলে। সে যদি আহার গ্রহণের প্রারম্ভে ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে ভুলে যায় তবে যেন বলেঃ ‘বিসমিল্লাহ ফী আওয়ালিহি ওয়া আখিরিহী’ (খাদ্যের প্রারম্ভে এবং শেষেও বিসমিল্লাহ)।

[সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৩২৬৪, তিরমিযী ১৮৫৮ আবূ দাউদ ৩৭৬৭, আহমাদ ২৪৫৮২, ২৫২০৫, ২৫৭৬০, দারেমী ২০২০, ইরওয়া ১৯৬৫, আত-তালীকুর রাগীব ৩/১১৫, ১১৬, তাখরিজূল কালিমুত তায়্যিব ১১২ অনুসারে] [হাদিসের মান: সহিহ হাদিস]


৩। সাদাক্বাহ করাঃ- আল্লাহ তা'য়ালার দেয়া রিজিক থেকে দান সাদাক্বাহ করা। সর্বোৎকৃষ্ট দান হচ্ছে সর্বোচ্চ গোপনীয় দান। যার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা রিজিকে বরকত দিবেন এবং বালা-মূসিবত দূর করে দিবেন।

আবু সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাঃ) বলছেন “গোপনে দান প্রতিপালকের ক্রোধ দূরীভূত করে, আত্মীয়তার-বন্ধন রক্ষা করা আয়ু বৃদ্ধি করে। আর পুণ্যকর্ম সর্বপ্রকার কুমরণ থেকে রক্ষা করে।”

[বাইহাক্বীর শুআবুল ঈমান ৩৪৪২, সহীহুল জামে ৩৭৬০, হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ৯৭৯ অনুসারে, [হাদিসের মান: সহিহ হাদিস]


৪। যাকাত দেয়াঃ- সম্পদের যাকাত প্রদান করা এবং সুদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা। সুদের টাকা আল্লাহ তায়ালা ধ্বংস করে দিবেন। আর যে সম্পদের যাকাত দেয়া হয়েছে সে সম্পদকে তিনি বহুগুণে বৃদ্ধি করে দিবেন। [সূরাহ আল-বাক্বারাহঃ আয়াত নং ২৭৬ অনুসারে]


৫। রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করাঃ- রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করলে আল্লাহ তায়ালা হায়াতে এবং সম্পদে বরকত দান করবেন। যে তার হায়াত এবং রিজিক বৃদ্ধি করতে চায় সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে চলে। [বাইহাক্বীর শুআবুল ঈমান ৩৪৪২, সহীহুল জামে ৩৭৬০, হাদিস সম্ভার, হাদিস নং ৯৭৯, অনুসারে, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস]


৬। পরিবারে নামাজ প্রতিষ্ঠা করাঃ- নিজে নামাজের উপর অটল থাকা এবং পরিবারের সবাইকে সালাতের আদেশ দেয়া। তাহলে আল্লাহ তায়ালা রিজিক বাড়িয়ে দিবেন। [সূরাহ ত্বাহাঃ ১৩২ অনুসারে]


৭। সালাম দেয়াঃ- পরিচিত অপরিচিত সবাইকে সালামের সম্পূর্ণ বাক্য দিয়ে সালাম দেয়া। যার অর্থ হচ্ছে "আপনাদের উপর শান্তি, আল্লাহর রহমত এবং তাঁর বরকত বর্ষিত হোক।


৮। তাওবা এবং ইস্তিগফার পড়াঃ- বেশি বেশি ইসতিগফার পড়া এবং তাওবা করা। তাতে পাপের মার্জনা, অনাবৃষ্টিতে বৃষ্টি, সম্পদের বৃদ্ধি, নিঃসন্তানকে সন্তান/সন্তানের বৃদ্ধি, বাগানসমূহের মালিকানা, মৃত্তিকায় পানির প্রবাহ, শক্তির সাথে আরো শক্তি বৃদ্ধি, সংকীর্ণতায় প্রশস্ততা, দুঃচিন্তায় নিশ্চিন্ততা এবং অকল্পনীয় জায়গা থেকে রিজিকের সুসংবাদ নিহিত রয়েছে। সর্বোপরি কেয়ামতের দিন নূর বা আলো এসে (পুল) সিরাতের অন্ধকার থেকে রক্ষার জন্য চেষ্টা করবে।

[সূরাহ নূহ, আয়াত নং১০-১২, সূরাহ হুদ, আয়াত নং ৫২, সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ১৫১৮, সুনান ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ৩৮১৯, সূরাহ আত-তাহরীম, আয়াত নং ৮ অনুসারে]


৯। বেশি বেশি দরূদ পড়াঃ- রাসূলে আকরাম (সাঃ) -এর প্রতি বেশি বেশি দরুদ পড়া। একবার দরূদ পড়লে ১০ টি গুণাহ মাফ করা হয়,১০ টি সাওয়াব লিখা হয়, ১০টি পদমর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া হয়।

[আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং ৬৪৬ অনুসারে]


১০। কোরানের সাথে গভীর সম্পর্ক করাঃ- বেশি বেশি কোরআনে কারীম (বুঝে) তেলাওয়াত করা। বিভিন্ন আায়াতে আল্লাহ তায়ালা এই কোরআনকে "কিতাবুন মোবারাক" তথা বরকতময় গ্রন্থ বলে উল্লেখ করেছেন।

[সূরাহ আল-আন'আম, আয়াত নং ১৫৫, সূরাহ আল-আম্বিয়া, আয়াত নং ৫০, সূরাহ সাদ, আয়াত নং ২৯ অনুসারে]


১১। আল্লাহ্‌ তায়ালার উপর ভরসা করাঃ- আল্লাহ তা'আলার উপর তাওয়াক্কুল করার মত তাওয়াক্কুল করা। ভরসার মত ভরসা করতে পারলে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ঐভাবে রিজিক দিবেন যেভাবে খালি পেটে বের হয়ে যাওয়া পাখিগুলোকে উদর পূর্তি করে বাসায় ফিরিয়ে দেন।

[সূরাহ আলি- ঈমরান, আয়াত নং ১২২, ১৬০, সূরাহ আল-মূলক, আয়াত নং ২১, মুসনাদ আহমাদ ২০৫, সুনান আত্-তিরমিযী ২৩৪৪, সুনান ইবনে মাজাহ ৪১৬৪, হাকেম ৭৮৯৪, সহীহুল জামে ৫২৫৪নং অনুসারে] [হাদিসের মান: সহিহ হাদীস]


১২। ভোর বেলায় কাজের সূচনা করা এবং সকালে না ঘুমানোঃ- ভোর বেলায় কাজের সূচনা করা এবং সকালে না ঘুমানো। রাসূল সাঃ আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের জন্য সকালের সময়ে বরকতের জন্য দোয়া করেছেন। [সুনান আবু দাউদ ২৬০৬, সুনান আত্-তিরমিযী ১২১২ অনুসারে]


১৩। হজ্জ এবং উমরা করাঃ- হজ্ব পালন করলে আল্লাহ তায়ালা সম্পদে বরকত বৃদ্ধি করে দেন। পূণ্যবান হজ্ব পাপ এবং অভাব দূর করে দেয়।

আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা হজ্জ ও উমরা পরস্পর (হজ্জ সমাপনের পর উমরা এবং উমরার পর হজ্জ) আদায় করবে, কেননা তা অভাব ও পাপ এরূপ দূর করে দেয়, যেরূপ হাপর লোহা, সোনা ও রুপার ময়লা দূর করে থাকে। আর ‘মাবরূর’ হজ্জের বিনিময় জান্নাত ব্যতীত আর কিছুই নয়।

[সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২৬৩১ হাদিসের মান: হাসান সহিহ]

১৪। কোন ব্যক্তি বা জনপদ ইমানদার ও তাক্বওয়াবান (আল্লাহ্‌ ভীরু) হওয়াঃ- কোন জনপদের সবাই যদি ঈমান আনে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য আকাশ ও জমিনের বরকতের দরজাগুলো খুলে দেন।

[সূরাহ আল-আ'রাফ, আয়াত নং ৯৬ অনুসারে]



- মোহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম আযহারী

(এডেড এন্ড এডিটেড এ শর্ট লেকচার ফ্রম শাইখ আহমাদুল্লাহ)

ree

 
 
 

Comments


bottom of page